 
                                                                                                                                                                                                                                ‘তোমার  জন্য আরেকটা এনে দেব। যেটা আনব, সেটাও এটার মতো ফুল দেবে।’ সৌপ্তিক  ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আমি তার কান্না থামানোর চেষ্টা করছি। আমার ছোট্ট কাকাতো  ভাইটি ফুলগাছ খুব ভালোবাসে। এবার নার্সারি থেকে ওর জন্য একটি ডালিয়ার চারা  এনেছিলাম। এবারের শীতে এটি ফুল দিয়ে মরে যাচ্ছে দেখে তার এত কান্না। তার  কান্না দেখে আমি বেশ বিচলিত হয়ে পড়ি। অল্প একটু কান্না থামলে সে বলে, ‘তুমি  কবে এনে দেবে? তুমি একটিমাত্র চারা এনেছ, সেটিই মরে গেল! অনেকগুলো এনে  দিতে পারো না! আচ্ছা, শোনো, তুমি যখন চট্টগ্রামে যাবে, সেখান থেকে আমাকে  চিঠি পাঠাবে। খামের ভেতর অনেকগুলো বীজ দেবে। আমি সেগুলো ছাদের টবে লাগাব।  পাঠাবে কি না, বলো?’ তার এই সুন্দর পরিকল্পনা আমাকে অভিভূত করে। খুব আদর  করে বলি, ‘আলবত পাঠাব।’ তাকে নিয়ে ছাদে উঠি। ছাদে কোনো ফুল নেই, সবুজ পাতা  নেই দেখে আমার বুকটা হাহাকার করে। চারপাশে তাকাই, প্রকৃতিকে অনুভব করি, কান  পেতে প্রকৃতির কথা শুনি। কারা যেন তাকে খারাপ চিঠি পাঠাচ্ছে, সেই চিঠিতে  সিগারেট-যানবাহন-কলকারখানার ধোঁয়া টগবগ করছে। প্রকৃতি কেঁদে কেঁদে এগুলো  বলছে আর সবুজ চিঠি পাঠানোর অনুরোধ করছে, যে চিঠিতে অনেক সবুজ প্রাণ থাকবে।  আমার হাত নেড়ে সৌপ্তিক বলে, ‘তুমি কি কিছু শুনতে পাচ্ছ? কে যেন সবুজ চিঠি  পাঠাতে বলছে।’ প্রকৃতি তাহলে সবাইকেই বলছে! সবাই কি তা শুনতে পাচ্ছে! নাকি  সবই আমার অন্ধকারের স্বপ্ন, আলোর মুখ দেখতে এসেছি বলে আমরা দুজন শুনতে  পেয়েছি।
তুষার রায়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
তুষার রায়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
 






 
 
 
 
0 comments:
Post a Comment